চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে গ্রুপিং-কোন্দল বন্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দলের প্রয়োজনে সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে তৃণমূল কমিটি গঠন প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তৃণমূল সম্মেলন শেষ হওয়ার পর নগর নেতৃত্বে কারা আসবেন সেটা তিনি নিজেই দেখবেন। গণভবনে নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠকে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা রোববার এসব কথা বলেন। বৈঠকে যোগ দেওয়া একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে নগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করে নাছির বিরোধী কয়েকজন নেতা বলেন, নিয়মনীতি না মেনে মাহতাব-নাছির তৃণমূল কমিটি গঠন করছেন। তাই তারা চান আগে নগর নেতৃত্ব নির্বাচন, পরে তৃণমূল কমিটি গঠন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাদের এ প্রস্তাব নাকচ করে গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্মেলনের পক্ষে মত দেন। তৃণমূল কমিটি গঠন যে নিয়মতান্ত্রিকভাবে হচ্ছে তার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

সূত্র জানান, নাছিরবিরোধী হিসাবে পরিচিত নেতারা তিন বছর ধরেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছিলেন। নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক নানা বিষয় ও গ্রুপিং কোন্দল সম্পর্কে কথা বলার জন্যই তারা দলীয় প্রধানের সাক্ষাৎ চেয়ে আসছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের গণভবনে ডেকে পাঠান। একই সঙ্গে তিনি ডেকে পাঠান নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেও। মূলত একপক্ষের সঙ্গে কথা না বলে দুইপক্ষের অভিযোগ-অনুযোগ শুনে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্যই বৈঠকের এ ব্যবস্থা করেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত থাকা অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল সোমবার যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে না। তৃণমূলে কমিটি গঠন নিয়ে চলছে বিশৃঙ্খলা।

এসব বিষয়ে দলীয় প্রধানকে জানানো এবং সংগঠনকে গতিশীল করতে নির্দেশনা নেওয়ার জন্যই আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করে আসছিলাম। করোনাসহ নানা কারণে প্রধানমন্ত্রী সময় দিতে পারেননি। সর্বশেষ রোববার ডেকে পাঠালে আমরা আমাদের অভিযোগ-অনুযোগগুলো তাকে বলেছি। নগর আওয়ামী লীগের তৃণমূল কমিটি গঠনে যে সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা চলছে, ত্যাগীরা স্থান পাচ্ছে না সেটাও বলেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তিনি তৃণমূল কমিটিতে ত্যাগীদের স্থান দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। সবাইকে বলেছেন, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। যোগ্য লোক যাতে যোগ্যতম স্থান পায় সেটি দেখতে হবে।